আমাদের গ্রাম রচনা ৪র্থ শ্রেণি – আদর্শ গ্রাম রচনা
আমাদের গ্রাম রচনাটি ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের স্তর অনুযায়ী খুব সহজ ও সরল ভাষায় তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া ৩য় বা ৫ম শ্রেণিতেও এটি একইভাবে পড়ানো যায়। ছোট শ্রেণিগুলোতে অনেক সময় সরাসরি “আমাদের গ্রাম” শিরোনাম না দিয়ে ‘গ্রামের প্রকৃতি’, ‘গ্রামের পরিবেশ’ বিষয়েও লিখতে বলা হয়। আবার বিভিন্ন ভর্তি পরীক্ষা বা সংক্ষিপ্ত প্রশ্নেও অনুচ্ছেদ আকারে গ্রামের বর্ণনা লেখার প্রয়োজন হয়। সেই বিষয়টি মাথায় রেখে রচনাটি সহজবোধ্যভাবে সাজানো হয়েছে।
বাংলা ২য় পত্রের জন্য রচনাটি খুবই সহজ, সাবলীল ও ছন্দময় ভাষায় লেখা হয়েছে, যাতে ছাত্রছাত্রীরা দুই একবার পড়লেই মনে রাখতে পারে। শিক্ষার্থীদের বোঝার সুবিধার জন্য এখানে ব্যবহৃত শব্দগুলোও সহজ করে দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা পরীক্ষায় আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে লিখতে পারে। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক ‘আমাদের গ্রামের’ রচনা গুলো।
আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশের প্রকৃতি রচনা ৪র্থ শ্রেণি
আমাদের গ্রাম রচনা ৪র্থ শ্রেণি
রচনা – ১
ভূমিকা
গ্রাম হলো প্রকৃতির কোলে শান্ত ও সুন্দর একটি জায়গা। আমি এমনই একটি মনোরম গ্রামে বাস করি। আমাদের গ্রাম আমার কাছে অত্যন্ত প্রিয়।
গ্রামের প্রকৃতি
আমাদের গ্রাম সবুজ গাছপালা ও ফসলের মাঠে ঘেরা। সকালে পাখির ডাকে ঘুম ভাঙে। গ্রামের পাশ দিয়ে একটি পরিষ্কার ছোট নদী বয়ে গেছে। নদীর ধারে দাঁড়ালে খুব সুন্দর লাগে।
গ্রামের মানুষ
গ্রামের মানুষ খুব পরিশ্রমী ও ভালো। তারা ভোরে মাঠে কাজে যায় এবং সারা দিন ফসল ফলায়। সবাই একে অপরকে সাহায্য করে। গ্রামের পরিবেশ খুব শান্ত ও বন্ধুত্বপূর্ণ।
গ্রামের বিদ্যালয় ও খেলার মাঠ
আমাদের গ্রামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। আমি সেখানে পড়ি। স্কুলের বড় মাঠে আমরা দৌড়ঝাঁপ, ফুটবল ও নানা রকম খেলা খেলি। বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা করতে খুব ভালো লাগে।
গ্রামের বাজার
গ্রামের মাঝখানে একটি ছোট বাজার আছে। সেখানে মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব জিনিস কিনে। প্রতি সপ্তাহে হাট বসে, তখন বাজার জমে ওঠে।
উৎসব ও আনন্দ
গ্রামে ঈদ, পহেলা বৈশাখসহ নানা উৎসবে সবাই একসাথে আনন্দ করে। উৎসবের দিনে গ্রাম আরও রঙিন হয়ে ওঠে।
উপসংহার
আমাদের গ্রাম সুন্দর, শান্ত ও ভালোবাসায় ভরা একটি স্থান। প্রকৃতি, মানুষ, পরিবেশ সব মিলিয়ে গ্রাম আমার হৃদয়ের খুব কাছের। তাই আমি আমার গ্রামকে খুব ভালোবাসি।
রচনা – ২
ভূমিকা
বাংলাদেশের সৌন্দর্যের বড় অংশই লুকিয়ে আছে গ্রামে। আমি একটি ছোট ও শান্ত গ্রামে থাকি, যা আমার কাছে অত্যন্ত ভালো লাগে।
গ্রামের পরিবেশ
আমাদের গ্রামের বাতাস খুব পরিষ্কার। গ্রামের পাশে একটি বড় পুকুর আছে, যেখানে মাছ লাফাতে দেখা যায়। চারপাশে সর্ষেফুল, কচুক্ষেত ও আমগাছ গ্রামের সৌন্দর্য আরও বেড়ে দেয়।
মানুষের জীবনযাপন
গ্রামের মানুষ খুব সৎ, সরল ও নম্র। তারা পরিশ্রম করে জীবিকা অর্জন করে। যে কোনো সমস্যায় সবাই একসঙ্গে দাঁড়ায়। গ্রামের এই ঐক্য সবাইকে মুগ্ধ করে।
শিক্ষা ও ধর্মীয় স্থান
গ্রামে একটি বিদ্যালয় ছাড়াও একটি ছোট মসজিদ আছে। প্রতিদিন সকালে আজানের শব্দে চারদিক মুখরিত হয়। শিশুরা নৈতিকতা ও আদর্শ শেখার সুযোগ পায়।
খেলা ও বিনোদন
গ্রামের শিশুরা মাঠে ক্রিকেট, দাড়িয়াবান্ধা, কানামাছি ও ঘুড়ি ওড়ানো খেলে। শীতের সকালে খেজুরের রস খাওয়া এটাও আমাদের গ্রামের বড় আনন্দ।
উপসংহার
আমাদের গ্রাম সৌন্দর্য, শান্তি ও আপন মানুষের ভালোবাসায় ভরা একটি স্থান। গ্রামের প্রকৃতি ও মানুষের আচরণ আমাকে সবসময় আনন্দ দেয়। তাই আমাদের গ্রাম আমার হৃদয়ের সবচেয়ে কাছের জায়গা।
রচনা – ৩
ভূমিকা
শহরের কোলাহল থেকে দূরে গ্রামের পরিবেশ স্বচ্ছ, নির্মল ও মনকে আনন্দিত করে। আমি এমন একটি গ্রামে থাকি যেখানে প্রতিটি সকাল শুরু হয় পাখির ডাকে আর প্রকৃতির স্নিগ্ধ বাতাসে।
গ্রামের দৃশ্যপট
আমাদের গ্রামটি খুব সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন। গ্রামের মাঝ দিয়ে একটি লম্বা কাঁচা রাস্তা গেছে। রাস্তার দুই পাশে নারকেল, খেজুর ও আমগাছ সারি সারি দাঁড়িয়ে আছে। সকালে সূর্যের আলো গাছের পাতায় পরে ঝিলমিল করে।
ফসল ও মাঠঘাট
গ্রামের বড় বড় মাঠে ধান, সবজি আর সরষে চাষ করা হয়। শীতকালে সরষে ফুলের হলুদ রঙ দেখে মন ভরে যায়। কৃষকেরা সারা বছর পরিশ্রম করে এসব ফসল ফলায়।
গ্রামের মানুষ ও কাজ
আমাদের গ্রামের মানুষ খুব অতিথিপরায়ণ। কেউ অসুস্থ হলে বা কোনো বিপদে পড়লে সবাই একসঙ্গে সাহায্য করে। কৃষিকাজ ছাড়াও কেউ কেউ মাছ চাষ ও ছোট ব্যবসা করেন।
বিনোদন ও ঐতিহ্য
গ্রামে নানা ধরনের খেলা হয় হাডুডু, দাড়িয়াবান্ধা, লাঠিখেলা ইত্যাদি। শীতকালে পিঠা উৎসব হয়, আর সবাই আনন্দে পিঠা খায়। ঈদ ও অন্যান্য উৎসবে গ্রাম পুরোপুরি উৎসবমুখর হয়ে ওঠে।
উপসংহার
আমাদের গ্রাম শুধু থাকার জায়গা নয়, এটি আমাদের সুখ দুঃখের আশ্রয়। এখানে প্রকৃতির সৌন্দর্য, মানুষের ভালোবাসা ও সহজ জীবন সব মিলেই এক অনন্য শান্তি তৈরি করে। তাই আমার কাছে আমাদের গ্রাম পৃথিবীর সবচেয়ে প্রিয় স্থান।
আমাদের গ্রাম সম্পর্কে ১০টি বাক্য

টাঙ্গাইল জেলায় অবস্থিত করটিয়া একটি সুন্দর ও আদর্শ গ্রাম। এই গ্রামেই আমি আমার শৈশব ও কৈশোরের সোনালী দিনগুলো কাটিয়েছি। আমাদের গ্রামে দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে, যা শিশুদের শিক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গ্রামের মানুষ প্রার্থনার জন্য দুটি মসজিদ ব্যবহার করে। এছাড়া গ্রামে দুটি ব্যাংক, একটি ডাকঘর এবং একটি বড় বাজার রয়েছে।
করটিয়া গ্রামের জনসংখ্যা প্রায় আট হাজার। এখানে হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ সবাই মিলেমিশে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে। মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক কৃষিকাজ করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে। গ্রামের প্রাকৃতিক দৃশ্য খুবই সুন্দর ও মনোমুগ্ধকর। সব মিলিয়ে আমাদের করটিয়া গ্রাম সত্যিই একটি আদর্শ ও শান্তিপূর্ণ গ্রাম।
পরিশেষে
ছোট শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সাধারণত বড় বা জটিল বাক্য লিখতে পারে না। তাই তাদের জন্য তৈরি করা যেকোনো রচনা বা অনুচ্ছেদ সাধারণত অল্প শব্দের মধ্যে রাখা হয়। এতে বাক্যগুলো সহজ ও সংক্ষিপ্ত হয় এবং জটিল ব্যাখ্যা এড়িয়ে যাওয়া হয়। এইভাবে রচনা তৈরি করলে শিক্ষার্থীরা গ্রাম ও গ্রামের জীবনধারার বিভিন্ন বিষয় উদাহরণসহ ধীরে ধীরে বুঝতে পারে এবং তাদের মনে ধারণাগুলো সহজে ধরে থাকে।
আমরা যে ‘আমাদের গ্রাম’ রচনাটি ৪র্থ শ্রেণির জন্য সাজিয়েছি, তা শিক্ষার্থীদের কাছে খুব উপযোগী হবে। গ্রামের প্রকৃতি, নদী, মাঠ, গাছপালা, মানুষ ও উৎসবগুলো শিক্ষার্থীর মনে গ্রামের প্রতি ভালোবাসা জাগায়। এছাড়া গ্রামের সহজ জীবন, পারস্পরিক সাহায্য ও নৈতিক মূল্যবোধের কথা শেখার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতে দায়িত্বশীল ও সচেতন নাগরিক হতে উৎসাহিত হবে।